আমরা হার্ট অ্যাটাক বললেই কল্পনা করি হঠাৎ প্রচণ্ড বুক ব্যথা, গলা আটকে আসা, অথবা মাটিতে লুটিয়ে পড়া একজন মানুষ। কিন্তু জানেন কি—সব হার্ট অ্যাটাক এমন নাটকীয়ভাবে আসে না?
কখনও কখনও এটি আসে নিঃশব্দে, নিঃশ্বাসের ফাঁকে, অল্প অস্বস্তি বা হালকা ব্যথার আড়ালে। এটাই “নীরব হার্ট অ্যাটাক”—যা আপনার অজান্তেই হার্টকে ক্ষতিগ্রস্ত করে দেয়। বিপদ হল, আমরা সচরাচর এই নীরব বার্তাগুলোকে বুঝতে পারি না বা গুরুত্ব দিই না।
আজকে আমরা জানব—
- কেন অনেকেই লক্ষণ চিনতে ব্যর্থ হন
- কোন অদ্ভুত লক্ষণগুলোকে অবহেলা করা উচিত নয়
- মিথ, ভুল তথ্য, আর প্রয়োজনীয় সচেতনতা ১. নীরব হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কে অজানা থাকা – বিপদের শুরু এখানেই
আমাদের ধারণা—হার্ট অ্যাটাক মানেই বুক ফেটে যাওয়া যন্ত্রণার মতো কিছু। বাস্তবে, নীরব হার্ট অ্যাটাক-এর লক্ষণ খুবই সূক্ষ্ম হতে পারে— - বুকের হালকা চাপ বা অস্বস্তি
- হাত, পিঠ, গলা, এমনকি দাঁতে ব্যথা
- হঠাৎ দুর্বলতা বা ক্লান্তি
- শ্বাসকষ্ট, ঘাম, বা বমি ভাব
এসব লক্ষণকে আমরা প্রায়ই ‘গ্যাস’, ‘ক্লান্তি’, বা ‘হালকা ঠান্ডা লাগা’ বলে ভুল করি। ফল—বিপদের ঘণ্টা বাজে, অথচ শোনা যায় না!
২. অস্বাভাবিক লক্ষণ উপেক্ষা – নীরব খুনি:
আপনি কি ভেবেছেন বুক ব্যথা না হলে হার্ট অ্যাটাক অসম্ভব? ভুল!
অস্বাভাবিক লক্ষণ যেমন—
- অবসন্নতা
- মাঝেমাঝে শ্বাস আটকে আসা
- ঘাম বা মাথা ঘোরা
এসব কিছুই হার্ট থেকে আসা সতর্ক সংকেত হতে পারে। আপনি যদি এগুলোকে “পাত্তা দেওয়ার মতো নয়” ভেবে এড়িয়ে যান, হতে পারে সেটাই হবে আপনার সবচেয়ে বড় ভুল।
৩. অস্বীকার ও ভুল ব্যাখ্যা – ‘আমার কিছু হয়নি’ ভাবনার ফাঁদ:
অনেকেই মনে করেন, “আমার এমন কিছু হবে না” বা “এটা তো পেটের সমস্যা”। এই ভুল ব্যাখ্যাই অনেক জীবনকে মাঝপথে থামিয়ে দেয়।
বিশেষ করে মহিলাদের এবং ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে নীরব হার্ট অ্যাটাক-এর লক্ষণ এতটাই ঢেকে যায় যে নিজেরাই চিনতে পারেন না।
৪. মিথ ও গুজব – যে বিশ্বাসগুলো জীবনহানিকর
- “বুক ব্যথা নেই, মানে হার্ট অ্যাটাক নয়।”
- “তরুণদের হার্ট অ্যাটাক হয় না।”
- “নীরব হার্ট অ্যাটাক তেমন গুরুতর নয়।”
বাস্তবে এদের কোনওটাই সত্যি নয়। হার্ট অ্যাটাক যেকোনো বয়সে হতে পারে, আর নীরব হোক বা প্রচণ্ড—দুটোই সমান মারাত্মক।
৫. ব্যথা ঢাকার অভ্যাস – বিপদ লুকিয়ে রাখা
অনেক সময় হালকা ব্যথা উপশমের ওষুধ খেয়ে আমরা সমস্যাকে ঠেকাই, ভাবি ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু এতে আসল সমস্যাকে ঢেকে রাখছি—যেখানে সমস্যা হতে পারে হার্টের ভেতরেই!
এই ফাঁদে পা দিলে চিকিৎসা পিছিয়ে যায়, আর ততক্ষণে ক্ষতি বাড়তে থাকে।
৬. সঠিক স্বাস্থ্যসেবার অভাব – সময় হারানো মানেই জীবন হারানো
অনেকেই সঠিক সময়ে ডাক্তার দেখাতে দেরি করেন। হয়তো হাসপাতালে পৌঁছাতে সময় লাগে, অথবা টেস্ট করাতে অবহেলা হয়। কিন্তু মনে রাখবেন—হার্ট অ্যাটাক-এর প্রতিটি মিনিটই জীবন-মৃত্যুর খেলা।
জীবন সুরক্ষা হাসপাতালের তরফ থেকে বার্তা:
- নীরব হার্ট অ্যাটাক-এর সবচেয়ে বড় শত্রু হল আপনার অজ্ঞানতা ও অবহেলা
- শরীরের সূক্ষ্ম সংকেতগুলো শুনতে শিখুন
- যেকোনো অস্বাভাবিকতা হলে দেরি না করে হাসপাতালে যোগাযোগ করুন
নীরব হার্ট অ্যাটাক নাটকীয় শব্দহীন বিপদ। এর বিরুদ্ধে আপনার একমাত্র হাতিয়ার—সচেতনতা, দ্রুত প্রতিক্রিয়া, এবং সঠিক স্বাস্থ্যসেবা।
আপনার শরীর যদি কোনও অদ্ভুত সংকেত দেয়—পাত্তা দিন, কারণ সেটাই হতে পারে জীবন বাঁচানোর শেষ সুযোগ।
জীবন সুরক্ষা হাসপাতাল আছে আপনার পাশে, ২৪ ঘন্টা প্রস্তুত, যাতে আপনি পেতে পারেন সঠিক পরীক্ষা, দ্রুত চিকিৎসা ও সুস্থ হৃদয়।
অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করার জন্য:
ফোন করুন: ৮১৭০০২১৩০৩
ইমেইল করুন: [email protected]
নিজেকে প্রতিশ্রুতি দিন—অবহেলা নয়, সচেতনতা বেছে নেবেন।